প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রেসকার্ড নিউজ: আপনি কি কাঁচা লঙ্কা খান ? যদি না খান তাহলে ভুল করছেন, কারণ কাঁচা লঙ্কা শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, এর উপকারীতাও অনেক।
এটি শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। তবে শুকনো ও গুঁড়ো লঙ্কার থেকে কাঁচা লঙ্কা সুস্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী।
১০০ গ্রাম কাঁচা লঙ্কায় শর্করা, আমিষ, তৈল জাতীয় পদার্থ, ফাইবার, ভিটামিন এ, বি, সি, ই, কে, ছাড়াও ১০টি খনিজ লবণ ও ৩ টি গুরুত্বপূর্ণ ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে।
শুনলে অবাক হবেন যে, প্রতি গ্রাম কাঁচা লঙ্কায় যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে তা কমলালেবুর চেয়েও বেশি।
কাঁচা লঙ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ক্ষার জাতীয় ক্যাপসাইসিন। এর জন্যই এটি ঝাল বোধ হয় ও এর থেকে তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায়। এটি লঙ্কাকে পতঙ্গ ও অন্যান্য স্তন্যপায়ীদের হাত থেকে রক্ষা করে।
কাঁচা লঙ্কার আদি উৎস মধ্য আমেরিকা হলেও আজ ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এটি উৎপন্ন হচ্ছে।
কাঁচা লঙ্কায় ভিটামিন সি ও অন্যান্য অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় এটি কোষের ক্ষতি, হৃদরোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা নেয়। এছাড়া বিভিন্ন রোগ-সংক্রমণ প্রতিরোধেও এটি বিশেষ সাহায্য করে।
এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও রক্ত জমাট বাধার সম্ভাবনা কমায়, ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
কাঁচা লঙ্কায় পর্যাপ্ত খনিজ লোহা ও ভিটামিন সি থাকার ফলে এটি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় ও রক্তাল্পতা ও অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বিটা ক্যারোটিন থাকার ফলে কাঁচা লঙ্কা দৃষ্টিশক্তি ও চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
আপনার যদি চুল পাতলা ও উঠে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে সিলিকন ও আয়রন যুক্ত কাঁচা লঙ্কা আপনাকে সাহায্য করবে।
ত্বকের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা রক্ষায় ভিটামিন সি ও ই যুক্ত কাঁচা লঙ্কার ভূমিকা অসামান্য। এটি বয়স ধরে রাখতে ও তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ত্বকের র্যাশ, ব্রণ ও ফুসকুড়িও দূর করে।
কাঁচা লঙ্কায় কোনো ক্যালোরি থাকেনা বরং এটি বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি করে। তাই যারা অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে চান, তারা কাঁচা লঙ্কা খেয়ে দেখতে পারেন।
কাঁচা লঙ্কায় থাকা ক্যাপসাইসিন নামক উপাদান ঠান্ডা লাগা ও সাইনাসের সমস্যায়ও সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ফাইবার থাকার ফলে কাঁচা লঙ্কা মলত্যাগকে সহজ করে ও কোলন পরিষ্কার রাখে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এটি দেহের তাপমাত্রা কমাতে ও মেজাজ ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। আপনি লঙ্কার আচার করেও খেতে পারেন, মুখ ছাড়বে।
তবে যাদের অভ্যাস থাকে না তারা যদি বেশি পরিমাণে কাঁচা লঙ্কা খান, তাহলে তাদের জিভে জ্বলুনি, চোখে জল ও হেঁচকি উঠতে পারে। তাই বুঝেশুনে এটি খান ও উপভোগ করুন।
No comments:
Post a Comment