শীতকালে শুষ্ক ত্বকের কারণগুলিকে মোকাবেলা করার এবং সারা ঋতু জুড়ে শুষ্কতা প্রতিরোধ করার অনেক উপায় রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি আপনি আপনার নিয়মিত দৈনন্দিন অভ্যাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এই প্রসঙ্গে, কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালের ট্রাইকোলজিস্ট এবং নান্দনিক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ তৃপ্তি ডি. আগরওয়াল অনেক দরকারী তথ্য দিয়েছেন।
1) পুষ্টিকর খাবার খান
শীতকালে ত্বক সুস্থ রাখতে পুষ্টি, ভিটামিন এবং উপকারী চর্বি ও তেল ইত্যাদি যুক্ত খাবার খেতে হবে। মাটিতে জন্মায় এবং ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খান। অন্যান্য খাবার যেমন পালং শাক খান, যাতে প্রচুর জিঙ্ক থাকে। আয়রন সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার খান বা যেকোন সাপ্লিমেন্ট খান। বাদাম, মাছ, ডিম, অ্যাভোকাডো, জুচিনি, লেটুস, তরমুজ এবং চেডার পনির খান। মিষ্টি মূলের সবজি এবং স্যুপের জন্য মিষ্টি, পুষ্টিকর খাবার ব্যবহার করুন।স্ট্রবেরি, আঙ্গুর, ব্লুবেরি, রাস্পবেরি বা চেরির মতো রসালো ফল খান, যা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
2. আপনার ত্বক ময়শ্চারাইজ করুন
শীতে ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই মৌসুমে ক্রিম বা পেস্ট যেকোনো লোশনের চেয়ে বেশি পছন্দের। ময়েশ্চারাইজিং আপনার ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং ত্বকে প্রাকৃতিক তেলের অভাব হয় না। অ্যালকোহল, অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন, বিভিন্ন ধরণের মুখোশ এবং খোসা ব্যবহার করবেন না, কারণ শীতকালে এগুলোর ব্যবহার আপনার ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। সাধারণত নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল, বাটারমিল্ক, শসা ইত্যাদি হল সবচেয়ে সহজলভ্য প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার।
৩) প্রচুর জল পান করুন
ত্বককে কোমল ও সুন্দর করতে আপনার শরীরকে ভিতর ও বাইরে থেকে আর্দ্র রাখা খুবই জরুরি। যখন আপনার শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়, তখন যে কোনো জায়গা থেকে এমনকি ত্বক থেকেও জল টেনে শরীর তার চাহিদা পূরণ করে। আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৬ থেকে ৮ গ্লাস জল পান করুন।
৪) আর্দ্রতা বাড়াতে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন
হিটার নিয়মিত চালানো হলে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ঘরের পরিবেশ বেশ শুষ্ক হয়ে যায়। আপনার বাড়িতে বা অফিসে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন, যা শুষ্ক শীতের বাতাসকে হাইড্রেট করবে এবং আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখবে।
৫) ত্বকের এক্সফোলিয়েশন
স্কিন এক্সফোলিয়েশন শুধুমাত্র ত্বকের মৃত কোষ দূর করে না, এটি ত্বকে নতুন প্রাণ যোগ করে। এক্সফোলিয়েশন ময়েশ্চারাইজারকে ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে দেয়, কারণ এটি মৃত কোষগুলিকে সরিয়ে দেয় যা জীবন্ত ত্বকের কোষগুলির স্তরে ময়েশ্চারাইজারের উত্তরণকে বাধা দেয়। যাদের ত্বক সংবেদনশীল, তাদের সপ্তাহে একবার এক্সফোলিয়েট করা উচিৎ এবং ধীরে ধীরে করা উচিৎ। যাদের কম্বিনেশন বা তৈলাক্ত ত্বক আছে তাদের জন্য সপ্তাহে একবার বা দুবার এক্সফোলিয়েশন করা উচিৎ।
৬) শুষ্ক এবং ফাটা ঠোঁটের যত্ন নিন
প্রচণ্ড শীতে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমাদের ঠোঁটে তেল গ্রন্থি নেই, তাই অনেকগুলি কারণ তাদের প্রভাবিত করে। রোদ, বাতাস, ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাসের কারণে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। কারো কারো ঠোঁট সারাক্ষণ শুকিয়ে গেলেও শীতে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে, পেট্রোলিয়াম জেল, খনিজ তেল বা ডাইমেথিকোন যুক্ত লিপবাম দিনে 6 থেকে 8 বার লাগান।
এছাড়াও এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন, যেমন নিয়মিত ব্যায়াম করা, দিনে ও রাতে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করা, ভেজা কাপড় না পড়া, সানগ্লাস ব্যবহার করা ইত্যাদি।
এই সব খুব সহজ এবং আপনি আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন. এসব সত্ত্বেও আপনি যদি ত্বকে শুষ্কতা, চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া অনুভব করেন, তাহলে আপনার একজন দক্ষ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
No comments:
Post a Comment